-->

বাংলা সাহিত্যে হাট : শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ও চণ্ডীমঙ্গল - ড. চঞ্চলকুমার মণ্ডল

 

বাংলা সাহিত্যে হাট : শ্রীকৃষ্ণকীর্তন ও চণ্ডীমঙ্গল - ড. চঞ্চলকুমার মণ্ডল

মানব সভ্যতা-সংস্কৃতির জয়যাত্রার ক্ষেত্রে ‘হাট’ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। কিন্তু, মানুষের চলমান জীবনের বিপুল চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে সেই ‘হাট’ ব্যবস্থার ক্রম বিবর্তন ঘটতে ঘটতে, আজ হাটের প্রকৃত চেহারা লুপ্তপ্রায়। অতীতের সেই মানব সভ্যতার জীবনধারণে হাটের গুরুত্ব আর প্রাসঙ্গিকতা আজ কেবল সাহিত্যের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়ে রয়েছে। বিশ্বায়নের যুগে মানুষের জীবনধারা গেছে সম্পূর্ণ বদলে। বিপুল, জনস্ফীতির সাথে সাথে ‘হাট’ বসার মতো বিস্তৃত ফাঁকা মাঠের অভাব দেখা দিয়েছে। অতীতের শূন্য হাটের স্থান আজ প্রমোটারদের আগ্রাসন নীতিতে গগনচুম্বী অট্টালিকায় গ্রাস করেছে। আধুনিক জীবন ব্যবস্থায় হাটের প্রাসঙ্গিকতা তাই সম্পূর্ণ বদলেছে। এখন মানুষ সামান্য পা বাড়ালেই পেয়ে যায় বড় বড় সপিংমল কিংবা ঘরে বসেই মুঠো ফোনের দৌলতে পছন্দ মতো প্রয়োজনীয় সামগ্রী। কাজেই সময় নষ্ট করে সপ্তাহের একটি বিশেষ দিনের জন্য অপেক্ষার দিনও শেষ হয়েছে। সাথে সাথে ‘হাট’-এর দিনও শেষ বললেই চলে।

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অতি জনপ্রিয় দুই কাব্য (বড়ু চণ্ডীদাস বিরচিত শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য ও কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী বিরচিত অভয়ামঙ্গল কাব্য)-এ ঠাঁই পাওয়া লুপ্তপ্রায় হাট জীবনের অতীত চেহারাটি তুলে ধরার লক্ষ্যেই এই গ্রন্থ নির্মাণের প্রচেষ্টা। আগামী দিনে সমগ্র বাংলা সাহিত্যে উঠে আসা ‘হাট’ জীবনের প্রাসঙ্গিকতাকে পূর্ণাঙ্গ অবয়বে প্রকাশ করার আকাঙ্ক্ষা রইল।